প্রতারণা-চাঁদাবাজি তাঁর পেশা!

কুলাউড়া প্রতিনিধি : গ্রামের সহজ সরল মানুষ ও প্রবাসীদের পরিবারের লোকজনকে কৌশলে প্রতারণায় ফেলে ও হুমকি দিয়ে চাঁদাবাজি করে টাকা হাতিয়ে নিতেন মো. শামিম মিয়া। গরীব কন্যাদায়গ্রস্ত অভিভাবককে যুক্তারজ্য প্রবাসী পাত্রের প্রলোভন, বিয়ের সনদ জালিয়াতি করে ব্লাকমেইলিং, জায়গা বিক্রির নামে প্রতারণা ও চাঁদাবাজীতে দীর্ঘদিন ধরে শামীমের জন্য অতিষ্ট এলাকার সাধারণ লোকজন। শামীম মিয়া কুলাউড়া উপজেলার রাউৎগাঁওয়ের ভবানীপুর গ্রামের মৃত চিনু মিয়ার পুত্র।
সম্প্রতি শামীম কর্তৃক ওই এলাকার এক ব্যাক্তিকে পথরোধ করে মারধর করে টাকা লুট করে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে বেরিয়ে আসতে থাকে শামীমের সকল অপকর্মের বিষয়। ভয়ে তাঁর প্রতারণার শিকার লোকজন মুখ খুলতেননা এতদিন।
ভুক্তভূগীদের তথ্যমতে ও অনুসন্ধানে জানা যায়, গত বছরের ডিসেম্বরে জালিয়াতি করে জোরপূর্বক উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের তারেক মিয়া নামে বিবাহিত যুবককে ম্যারিজ সার্টিফিকেট তৈরী করে এক নারীর পরিচয় দিয়ে ব্লাকমেইল করে ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন শামীম। এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছিলো।
প্রায় এক বছর আগে উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের বাসিন্দা দরিদ্র রজব আলীকে তার মেয়ের জন্য যুক্তরাজ্যের পাত্রের প্রলোভন দেখায় শামীম। এজন্য রজব আলীর কাছে এক লক্ষ টাকা দাবি করেন শামীম। দাবিকৃত টাকার ৭৫ হাজার টাকা কয়েক ধাপে আদায় করেন শামীম। পরবর্তীতে টাকা নিয়ে সে সটকে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে একটি শালিশী বৈঠক হলেও শামীম ওই ব্যাক্তির টাকা ফেরত দেননি। এরপর বিভিন্ন সময় টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য ধরনা দিলেও টাকা পাননি। রজব আলী অবশেষে মারা যান।
রাউৎগাঁওয়ের ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত দানু মিয়ার মেয়ে বেলা বেগমের চাচা শশুরের ছেলে শেখ বদরুল হোসেন ও উনার ভাইয়ের সাথে প্রতারণা করে কয়েক মাস আগে জমি বিক্রয়ের নামে ৯২ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন শামীম। বেলা বেগমের শশুরবাড়ি রাজনগরের বকশীপুর এলাকায়। শেখ বদরুল হোসেন ওই এলাকার বাসিন্দা।
এদিকে গত ১১ মার্চ শুক্রবার রাতে ওই এলাকার বাসিন্দা সৈয়দ ছরফর আলী রাউৎগাঁওয়ের চৌধুরীবাজারে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের মাধ্যমে নগদ ৩০ হাজার টাকা উত্তোলন করে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় শামীম বিষয়টি দেখতে পান এবং বাজার থেকে একটু অদূরে সড়কের পাশে সহযোগি নিয়ে উৎপেতে থাকেন। অন্ধকারে মোটরসাইকেল আটকিয়ে ছরফর আলীকে মারধর করে জখম করে ত্রিশ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যান। এ ঘটনায় ছরফর আলী শামীমসহ ২জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর শামীম পলাতক রয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শামীম মিয়ার মোবাইলে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি বিষয়গুলো অস্বীকার করে বলেন এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় জানান, ছরফর আলীকে মারধর করে টাকা লুটের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার প্রধান অভিযুক্ত শামীম এলাকায় বিভিন্ন লোকের সাথে প্রতারণা করে আসছে। সে পলাতক রয়েছে। তাঁকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *