মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের নির্বাচন আওয়ামীলীগ প্রার্থী  মিছবাহুর রহমান, প্রার্থী দিচ্ছনা  বিএনপি 

হারিস মোহাম্মদ: মৌলভীবাজার  জেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি নির্বাচনে যাচ্ছে না। কিন্তু নির্বাচনকে সামনে রেখে  ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সরব রয়েছেন। এ নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগের  মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা গেলেও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে এ নিয়ে কোনো উৎসাহ উদ্দীপনা  পরিলক্ষিত হচ্ছে না। দলটির নেতারা জানিয়েছেন দলীয় সরকারের অধীনে তারা কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না।

ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নের জন্য আবেদন করেছিলেন চার জন। ১০ সেপ্টেম্বর শনিবার দলটির স্থানীয় সরকার ও সংসদ নির্বাচন সংক্রান্ত পার্লামেন্টারি বোর্ডের সভায় বর্তমান প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমানের মনোনয়ন চূড়ান্ত করেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। এরই মধ্যে মিছবাহুর রহমান দলীয় মনোনয়নের আবেদন জমা দিয়েছেন। মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ আগামীকাল ১৫ সেপ্টেম্বর। সেদিক থেকে আর আছে মাত্র এক দিন। অথচ বিএনপি জাতীয় পার্টিসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর এখন পর্যন্ত কোনো প্রার্থী মাঠে নেই।

তবে গতবার বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় এবারও দলীয় মনোনয়ন না পেলেও আসন্ন জেলা পরিষদের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন বলে শুনা যাচ্ছে যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি আবদুর রহিম (সিআইপি)। তিনি যদি প্রার্থী না হন এবং অন্য দল থেকে কেউ যদি শেষ পর্যন্ত প্রার্থী না হন  তাহলে বর্তমান চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন।

বিগত মেয়াদে এই জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন সাবেক গণপরিষদের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান। নির্বাচিত হওয়ার পর বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান গত ২০২০ সালের ১৮ আগস্ট  করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। পরে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদটি শূন্য হলে উপ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ উপ-নির্বাচনে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমান  ৭৩২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী এমএ রহিম  ২০২ ভোট পান।

বর্তমানে মিছবাহুর রহমান জেলা পরিষদের প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করছেন। জেলা আওয়ামীলীগের এ প্রভাবশালী নেতার জেলাজুড়ে  ক্লীন রাজনৈতিক ইমেজ রয়েছে। এছাড়া তিনি জেলা জুড়ে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগকে সুসংগঠিত করতে কাজ করে যাওয়ায় জেলার সকল উপজেলার আওয়ামী নেতাকর্মীসহ জনপ্রতিনিধিদের  সাথে রয়েছে সুসম্পর্ক।

আলাপকালে জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা জানান, মিছবাহুর রহমান একজন যোগ্য নেতা হিসেবেই দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। তাঁকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ায় দলের সভানেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। তাঁকে বিজয়ী করতে জেলা আওয়ামীলীগ কাজ করে যাচ্ছে।

জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক পৌরসভা মেয়র ফয়জুল করিম ময়ূন এ বিষয়ে  বলেন, ‘আমরা এখন নির্বাচন নিয়ে চিন্তা ভাবনা করছি না। দেশনেত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রী   বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ এবং নির্দলীয়  তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে আমাদের আন্দোলন চলমান রয়েছে। এছাড়া বর্তমান সরকার ও ইসির অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না বিএনপি।’

জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র ফজলুর রহমান এ প্রসঙ্গে  বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা  জননেত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বিদ্রোহীদের ব্যাপারে কঠোর। বিগত জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের বড় বড় পদে থেকে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন এবার তাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। যে কারণে আওয়ামী লীগের কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হবে বলে আমার মনে হয় না। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যদি কেউ প্রার্থী হন দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নের জন্য আবেদন করেছিলেন চারজন। তারা হলেন বর্তমান প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুহিবুর রহমান তরফদার, সহসভাপতি মসুদ আহমেদ ও বিগত নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রহিম (সিআইপি)। কিন্তু আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার ও সংসদ নির্বাচন সংক্রান্ত পার্লামেন্টারি বোর্ডের সভায় মিছবাহুর রহমানের মনোনয়ন চূড়ান্ত করেন দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *