কুলাউড়া প্রতিনিধি : কুলাউড়া উপজেলার টিলাগাঁও ইউনিয়নে বড় ছেলে বিজিবির সুবেদার আব্দুল মোতালেব ও তাঁর স্ত্রী ছালেমা বেগমের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ও মামলার আসামী হয়ে ফেরারী জীবনের অবসান ঘটাতে প্রতিকার চেয়ে আব্দুল লতিফ (৯০) নামের এক বৃদ্ধ সংবাদ সম্মেলন করার তিন দিন পর এবার তাঁর ও তাঁর ছেলেদের বিরুদ্ধে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন ছালেমা বেগম নামের (আব্দুল লতিফের পুত্রবধু) এক গৃহবধু। ২৫ জুন কুলাউড়ার একটি রেষ্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করে গৃহবধু ছালেমা বেগম তার উপর নির্যাতন চালানো ও প্রাণে হত্যার চেষ্টা চালানোর অভিযোগ করেন। তিনি ৩ দেবর ও শ্বশুরের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেন। গত ১৯ জুন ও ০৩ এপ্রিল তার উপর নির্যাতন চালানো হয় বলে তিনি জানান। এ ঘটনায় তিনি কুলাউড়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। লিখিত বক্তব্যে ছালেমা বেগম জানান, তার স্বামী আব্দুল মোতালেব বিজিবিতে ও বড় ছেলে সরকারি চাকরিতে কর্মরত আছেন। বিধায় ছোট ছেলেকে নিয়ে তিনি গ্রামের বাড়িতে বসবাস করেন। দেবর আব্দুল হান্নান, আব্দুল মান্নান ও আব্দুল জলিল মিলে তাদের বাবা (আমার শ^শুর) আব্দুল লতিফকে ভুল পথে পরিচালিত করে নিজেদের মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি করে সম্পত্তি ভোগ দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন। আমাকে বারবার শারিরীকভাবে নির্যাতন করেছেন। তাদের জন্য সবসময় আতঙ্কে থাকি। আমার দেবরেরা আমাকে প্রাণে হত্যার অপতৎপতার লিপ্ত রয়েছে। এ ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি ন্যায় বিচার দাবি করেন।
উপজেলার টিলাগাঁও ইউনিয়নের চান্দপুর গ্রামের ৯০ বছরের বৃদ্ধ মোঃ আব্দুল লতিফের ৪ পুত্র। এর মধ্যে সবার বড় আব্দুল মোতালেব বিজিবির সুবেদার। বড় ছেলে আব্দুল মোতালেব ও তার স্ত্রী ছালেমা বেগমের অত্যাচার নির্যাতন ও মিথ্যা মামলায় আসামী হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এদিকে গত ২২ জুন আব্দুল লতিফ তাঁর পুত্র বিজিবি সদস্য ও তার স্ত্রী ছালেমা বেগমের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে প্রতিকার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বৃদ্ধ মোঃ আব্দুল লতিফ জানান, তার ৩৬ শতক সম্পত্তি ৪ ছেলেকে সমানভাগে বন্টন করে দেন। কিন্তু তার বড় ছেলে বিজিবিতে কর্মরত মোঃ আব্দুল মোতালেব গত ০৬ এবং ২১ মার্চ বাড়িতে ছুটিতে এসে তার স্ত্রী ছালেমা বেগমকে নিয়ে ৩য় ছেলে মোঃ আব্দুল হান্নানের বসতঘর সংলগ্ন কিছু জায়গা জোরপূর্বক দখল করে নেয়। এ ঘটনায় টিলাগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের নিকট আমার ছেলে লিখিত অভিযোগ করেন। গত ১২ মার্চ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মালিক স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ নিয়ে সালিশ বৈঠকে বসেন। বিষয়টি বানচাল করতে সুবেদার মোঃ আব্দুল মোতালেব ও তার স্ত্রী ছালেমা বেগম বাড়িতে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। গত ০৩ এপ্রিল কুলাউড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে অফিসার ইনচার্জ বিনয় ভূষন রায়ের নির্দেশে বিষয়টি স্থানীয় পর্যায়ে নিষ্পত্তির চেষ্টা করেন। কিন্তু সুবেদার আব্দুল মোতালেব নিষ্পত্তিকালে বাড়িতে না আসায় বিষয়টি নিষ্পত্তি হচ্ছে না। বৃদ্ধ আব্দুল লতিফ আরও অভিযোগ করেন গত ১৯ জুন বিকেলে পুত্রবধু ছালেমা বেগম তাকে মারপিট করেন। তার ছেলেরা তাকে উদ্ধার করে কুলাউড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন। ২১ জুন সোমবার এ ব্যাপারে কুলাউড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি আরও জানান, ছেলের এসব অপকর্মের ব্যাপারে গত ০৫ মে এবং ০৪ এপ্রিল বিজিবির মহাপরিচালকের কাছে পৃথক লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ বিনয় ভুষণ রায় জানান, এটা তাদের পারিবারিক বিষয়। উভয়পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।