সীমান্ত এলাকায় দিনমজুরের লাশ উদ্ধার; বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠক

জুড়ী প্রতিনিধি : মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা পাথারিয়া পাহাড়ের জঙ্গল থেকে এক দিনমজুরের লাশ উদ্ধার করেছে বিজিবি ও পুলিশ। নিখোঁজের এক দিন পর রবিবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে গোপাল ভাগতি (৩৫) নামের ওই যুবকের লাশ পাওয়া যায়।

গোপাল স্থানীয় সমনভাগ চা-বাগানের বাসিন্দা অখিল ভাগতির ছেলে। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। তবে কীভাবে মৃত্যু ঘটেছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পুলিশ কর্তৃক ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের মৃত্যুর সঠিক কারণ উদ্‌ঘাটন করা যাবে বলে জানিয়েছেন বিজিবি।

এদিকে স্থানীয় কিছু জনতা বিএসএফের গুলিতে গোপাল ভাগতি’র মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করলে এই বিষয়ে সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে বিজিবি-বিএসএফ কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং সীমান্তে এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজিবি। পাশাপাশি বিজিবির ৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক কর্তৃক বিএসএফ ১৬৩ ব্যাটালিয়নের অধিনায়কের কাছে সীমান্তে এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে একটি লিখিত চিঠি পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সূত্রে জানা যায়, গোপাল ভাগতি বাঁশ কাটতে শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে সীমান্ত-সংলগ্ন পাথারিয়া পাহাড়ের গহিন জঙ্গলে যায়। পরে আর বাড়িতে আসেনি। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও পরিবারের সদস্যরা গোপালের সন্ধান পায়নি। রবিবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় কিছু চা-শ্রমিক বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ১৩৯১ ও ১৩৯২ নম্বর মূল সীমান্তখুঁটির মধ্যে শূন্য রেখার ২০০ গজ অভ্যন্তরে একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে স্বজনেরা গিয়ে লাশটি গোপালের বলে শনাক্ত করেন। এরপর দুপুরের দিকে বিজিবির একটি দল ও বড়লেখা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।

ওই সীমান্ত বিজিবির ৫২ ব্যাটালিয়নের আওতায় পড়েছে। সিলেটের বিয়ানীবাজারে অবস্থিত বিজিবির ওই ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তরের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোঃ মেহেদী হাসান (পিপিএম) বলেন, ঘটনাস্থলটি গহিন জঙ্গল এখানে কোনদিন কোন ধরনের ঘটনা ঘটেনি। এত গহিন জঙ্গলে গোপালের এমন মৃত্যু রহস্যজনক। তবুও স্থানীয় কিছু জনতার দাবির প্রেক্ষিতে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক করে বিএসএফকে এই হত্যাকাণ্ডের জন্য তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে এবং আমাদের অধিনায়ক পর্যায়ে বিএসএফ এর ১৬৩ ব্যাটালিয়নের অধিনায়কের কাছে সীমান্তে এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে একটি লিখিত চিঠি পাঠিয়েছি।

বিয়ানীবাজার ব্যাটালিয়ন ৫২ বিজিবি’র অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোঃ মেহেদী হাসান (পিপিএম) আরো বলেন, গোপালের শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। তবে কিসের আঘাত, তা বোঝা যায়নি। ওইদিন আমাদের টহলদল সীমান্তে কোনো গোলাগুলির শব্দ শুনতে পায়নি। তাই কীভাবে এ ঘটনা ঘটল, তা বোঝা যাচ্ছে না।
পরবর্তী আইনি কার্যক্রম গ্রহণের জন্য গোপালের লাশ বড়লেখা থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। পুলিশ কর্তৃক ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের মৃত্যুর সঠিক কারণ উদ্‌ঘাটন করা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *