কুলাউড়া প্রতিনিধি : কুলাউড়ার হাজিপুর ইউনিয়নে আপন চাচাতো ভাইদের সাথে জায়গা সম্পত্তি নিয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে ওই বাড়িতে বসবাসকারী তত্ত্বাবধায়ক এক মহিলা ও তার ছেলেদের হামলায় আহত হয়েছেন ওই বাড়ির আরেক বাসিন্দা আব্দুল অদুদ চৌধুরী। এ ঘটনায় আব্দুল অদুদ চৌধুরী রোববার রাতে ৫জনকে অভিযুক্ত করে কুলাউড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, হাজীপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ভূইগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মৃত আব্দুল হাসিম মাস্টারের ছেলে জুবেদ আলম চৌধুরী ও জাহাঙ্গীর আলমের সাথে মৌরশী জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে একই বাড়ির বাসিন্দা মৃত হাজী আব্দুল লতিফ মাস্টারের ছেলে আব্দুল অদুদ চৌধুরীর সাথে। জুবেদ আলম ও জাহাঙ্গীর আলম সিলেটে বসবাস করায় তাদের জায়গা জমি দেখাশুনা করে তাদের বাড়িতে বসবাস করেন নেত্রকোণার বাসিন্দা অজিফা বেগম ও তাঁর ছেলেরা। কয়েক দিন পরপর জুবেদ আলম ও জাহাঙ্গীর আলম বাড়িতে এসে অজিফা বেগমসহ তার ছেলেদের প্ররোচনা দেন আব্দুল অদুদ চৌধুরীর ক্ষতি করার জন্য। যার কারণে আব্দুল অদুদ চৌধুরীর সাথে প্রায় সময় ঝগড়া লেগেই থাকে। ঘটনার দিন ৩০ এপ্রিল আব্দুল অদুদ চৌধুরীর স্ত্রী নাছুয়া খানম বাড়ীর পুকুর ঘাটে গেলে অজিফা বেগম কোন কারণ ছাড়াই পানি খাওয়ার মগ দিয়ে তার মাথায় আঘাত করেন। বিষয়টি নাছুয়া বেগম তার স্বামী আব্দুল অদুদ চৌধুরীকে জানালে তিনি অজিফা বেগমকে মারধরের কারণ জানতে চাইলে উল্টো তাঁর দিকে উত্তেজিত হয়ে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেন। তখন অজিফা বেগমের দুই ছেলে মারুফ আহমদ ও সারুফ আহমদ সিলেটে থাকা জুবেদ আলম ও জাহাঙ্গীর আলমের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে তারা দুই ভাই মারুফ আহমদ ও অজিফা বেগমকে নির্দেশনা দেন আব্দুল অদুদ চৌধুরীর ওপর আক্রমণ করার জন্য। সেই নির্দেশনা পেয়ে ৩০ এপ্রিল বিকেল ৪টায় আব্দুল অদুদ চৌধুরীর বসত বাড়ির উঠোনে অজিফা বেগমসহ তার ছেলেরা দেশীয় অস্ত্র দা ও লাঠি নিয়ে এলোপাতাড়ি হামলা চালায়। এতে আহত হন আব্দুল অদুদ চৌধুরী। এসময় তারা অদুদ চৌধুরীর সাথে থাকা ৫০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। পরে আব্দুল অদুদ চৌধুরী মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন।
অভিযুক্ত অজিফা বেগম বলেন, ঘটনার দিন পুকুরঘাটে আমি গোসল করতে গেলে অদুদ চৌধুরীর স্ত্রী আমাকে গালিগালাজ করেন। এসময় অদুদ চৌধুরী আমাকে মারার জন্য এগিয়ে আসলে আমরা ছেলে তাকে ধাক্কা দিয়ে মাঠিতে ফেলে দেয়। বিষয়টি আমি স্থানীয় মেম্বার-চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি।
সিলেটে থাকা জুবেদ আলম চৌধুরী মুঠোফোনে বলেন, আমরা স্বপরিবারে সিলেটে থাকি। আমাদের বাড়িঘর ও সম্পত্তি দেখাশুনার জন্য অজিফা বেগমকে তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে রেখেছি। কি কারণে তার সাথে আমার চাচাতো ভাইয়ের মারামারির ঘটনা ঘটেছে সেটা আমি জানিনা। বিষয়টি জানার পর স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। ঘটনার দিন মেম্বার বিষয়টি সমাধানের জন্য আমার চাচাতো ভাইকে বলেন কিন্তু তিনি মেম্বারের কথা শুনেননি উল্টো থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় বলেন, এ ঘটনায় অদুদ চৌধুরী বাদী হয়ে ৫জনকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিষয়টি তদন্ত চলছে। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।