বিয়ানীবাজারে বানের পানি বৃদ্ধি : আতঙ্কিত এলাকাবাসী

জেলা প্রতিনিধি, সিলেট :
সিলেটের বিয়ানীবাজারে বানের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে।কুশিয়ারা নদীর শেওলা পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৭২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সাথে কুশিয়ারা নদীর ডাইক উপচে এবং কয়েকটি স্থানে ভাঙা ডাইক দিয়ে হু হু করে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে।
নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় দুবাগ, শেওলা, কুড়ারবাজার, মাথিউরা, তিলপাড়া ও মোল্লাপুর, ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এতে এসব ইউনিয়নের নতুন করে ৯০ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
এদিকে সোনাই নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বিয়ানীবাজার উপজেলার লাউতা, মুড়িয়া ও তিলপাড়া ইউনিয়নের বহু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সোনাই নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জলঢুপ-লাতু সড়কের সিংহভাগ তলিয়ে গেছে। একই সাথে টিলাবেষ্টিত নাওলা, দক্ষিণ পাহাড়িবহরসহ আশপাশ এলাকা ডুবে গেছে।
এদিকে বিয়ানীবাজারে পানিবন্দি হয়ে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে এখানকার ১২৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। এর মধ্যে ২৯টি প্রতিষ্ঠানে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এতে পানিবন্দি ১৪২ গ্রামের ৩৯২ পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ায় উপজেলার প্রায় সবক’টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান স্থগিত রাখা হয়েছে। নদ-নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ অব্যাহত থাকায় উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে।
উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বন্যা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করা হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সার্বক্ষণিক কর্মস্থলে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দুর্গত এলাকায় সরকারিভাবে ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন। তবে বিতরণের ধীরগতিতে এখনও অনেক দুর্গত এলাকার মানুষ সহায়তা পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের তিন আশ্রয় কেন্দ্রে ২০ পরিবার, চারখাই ইউনিয়নের চার আশ্রয় কেন্দ্রে ৭০ পরিবার, দুবাগ ইউনিয়নের সাত আশ্রয় কেন্দ্রে ৮১পরিবার, শেওলায় ৭ আশ্রয় কেন্দ্রে ১৭ পরিবার, কুড়ারবাজারে ৪ আশ্রয় কেন্দ্রে ৮৮পরিবার, মাথিউরায় ১ আশ্রয় কেন্দ্রে ৩পরিবার, তিলপারায় ৩ আশ্রয় কেন্দ্রে ১৩ পরিবার, মুড়িয়া ৮টি আশ্রয় কেন্দ্রে ১০৮ পরিবার, লাউতায় ৩টি আশ্রয় কেন্দ্রে ১২০টি পরিবার এবং পৌরসভায় ২টি আশ্রয় কেন্দ্রে ১২টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন।
বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিক নূর বলেন, বন্যা মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে। দুর্গত এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যাদের ঘরবাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে তাদের নিকটবর্তী আশ্রয়কেন্দ্র কিংবা বিদ্যালয় ভবনে আশ্রয় নেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর বেশ কয়েকটি স্থানে ডাইক ভেঙে গেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ত্রাণ সহায়তা প্রদানে ঊর্ধ্ববতন কর্তৃপক্ষকে আমাদের চাহিদার বিষয়ে জানানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *